আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার এপার ওপার

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।

General Writing

IMG_5004.jpeg

made by @nusuranur

nowrin,.png

আজকে আবারো চলে আসলাম নতুন আরও একটি লেখা নিয়ে। আশা করি আজকের লেখাটিও আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

বর্তমান সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা বড় পরিবর্তন এসেছে। আগের দিনের সেই খাতা-কলম নির্ভর শিক্ষা পদ্ধতির জায়গায় এখন প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা জায়গা করে নিচ্ছে। মোবাইল, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট।এসব এখন পড়াশোনার অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে ক্লাস, ভিডিও লেকচার, ভার্চুয়াল এক্সাম, ডিজিটাল বই।এসবের মাধ্যমে আজকের শিক্ষার্থীরা নতুনভাবে জ্ঞান অর্জন করছে।

এই শিক্ষাব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সুফল হলো।এটা সবার জন্য সহজলভ্য হয়েছে। এখন একজন শিক্ষার্থী তার ঘরে বসে দেশের বা বিদেশের সেরা শিক্ষকদের থেকে পড়াশোনা করতে পারছে। ইউটিউব, গুগল, অনলাইন কোর্স।এসব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে খুব সহজেই বিভিন্ন বিষয় শেখা যায়। আগে যেখানে ভালো শিক্ষক বা ভালো বইয়ের জন্য শহরে যেতে হতো ।এখন তা আর প্রয়োজন পড়ে না।

আরেকটা ভালো দিক হলো ইন্টারঅ্যাকটিভ শেখা। শুধু মুখস্থ বিদ্যায় নয়, এখন শিক্ষার্থীরা ভিডিও, অ্যানিমেশন, সিমুলেশন, গেইমের মাধ্যমে পড়া শিখছে। এতে করে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহও বাড়ে। শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়, আর তারা বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে জিনিসগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে।

এই ব্যবস্থায় শিক্ষার গণ্ডি অনেক বড় হয়েছে। এখন একজন স্টুডেন্ট শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সে চাইলে কোডিং শিখতে পারে, গ্রাফিক ডিজাইন, ফটোগ্রাফি, এমনকি ব্যবসা সম্পর্কেও জানতে পারে। এতে করে তার দক্ষতা বাড়ে, আর ভবিষ্যতে চাকরির বাজারেও সে নিজের জায়গা তৈরি করতে পারে।

আরেকটা বড় সুফল হলো শেখার স্বাধীনতা। আধুনিক শিক্ষায় কেউ ইচ্ছা করলে নিজের সময় অনুযায়ী পড়তে পারে, ভিডিও বারবার দেখতে পারে, নিজের গতিতে শিখতে পারে। এতে করে চাপ কমে যায়, আর শেখার মানসিকতাও তৈরি হয়।

তবে এই ব্যবস্থায় কিছু কুফলও আছে। যেমন, প্রযুক্তি নির্ভর এই শিক্ষা পদ্ধতি অনেক সময় শিক্ষার্থীদেরকে খুব বেশি পরিমাণে স্ক্রিনে আসক্ত করে তোলে। এতে চোখের সমস্যা, একাকীত্ব এবং শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। আর আসলে সব জায়গায় ইন্টারনেট বা ডিভাইসের সহজলভ্যতা নেই বলে অনেক পিছিয়ে পড়া এলাকার শিক্ষার্থীরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।কারণ আমাদের দেশের ইন্টারনেট এর অবস্থা সম্পর্কে আমরা সবাই ই অবগত রয়েছি!

আরেকটা সমস্যা হলো আত্মনির্ভরতার ঘাটতি। অনেক সময় অনলাইন ক্লাসে স্টুডেন্ট মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না।যেমন আমি নিজেই আর গাইডলাইন ছাড়া শুধু প্রযুক্তি দিয়েই শেখা কঠিন হয়ে যায়। তাই শিক্ষকের উপস্থিতি, সরাসরি প্রশ্ন-উত্তর, আলোচনা।এসব জিনিস এখনও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার আরেকটি দিক হলো মূল্যবোধ ও শারীরিক শিক্ষার ঘাটতি। আগে বিদ্যালয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে শিশুরা সামাজিকতা, সহানুভূতি, দলগত কাজ শিখতো।এখন অনেকটাই একা একা শিখছে বলে সেই দিকটা কিছুটা কমে যাচ্ছে।তবে যত কুফলই থাকুক না কেনো প্রযুক্তির এই যুগে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা না বলে উপায় নেই বরং এখন দরকার এই ব্যবস্থাকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করা। অর্থাৎ, প্রযুক্তির সাথে সাথে মানবিক দিকগুলোও যেন গুরুত্ব পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সবাইকে এই দিকটা নিয়ে সচেতন হতে হবে।

আসলে সবচেয়ে বড় কথা, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের একটি নতুন পৃথিবীর দরজা খুলে দিয়েছে। এখন শুধু ভালো রেজাল্ট করাই নয় বরং ভালোভাবে শেখা, দক্ষ হওয়া, চিন্তা করতে শেখা এই দিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাই আধুনিক শিক্ষাকে আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে, এটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এক বিশাল আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে।

শিক্ষা মানেই কেবল পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা নয় বরং জীবন গঠনের পথ খোঁজার চেষ্টাই হলো প্রকৃত শিক্ষা। আর আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক সেই সুযোগটাই এনে দিয়েছে। এজন্য এই ব্যবস্থার যতো কুফলই থাকুক না কেনো সুফলই বেশি।যদি আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি।

The End📍
আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।


This is your beloved @nusuranur.



8FF7198D-D313-4FC3-ADE4-05C262C64B9E.png

Banner_PUSS2.png

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
1 Comment