🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰
প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো " দীর্ঘ কয়েকদিন বৃষ্টির পর রোদে ধান শুকানোর দৃশ্য ,গ্রামীণ জীবনের এক উজ্জ্বল অধ্যায় "। আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।
দীর্ঘ কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টির পর যখন আকাশে উঁকি দিয়ে সূর্য উঠে, তখন গ্রামীণ জনপদের চিত্র যেন এক মুহূর্তেই বদলে যায়। যেন প্রকৃতি নিজেই কৃষকদের কাঁধে আশার আলো ফেলে বলে "এবার শুরু করো, তোমার অপেক্ষার ফল পেতে দাও।" বৃষ্টির ধারাবাহিকতায় যখন ধান কাটা হলেও তা শুকাতে না পারায় কৃষকদের মুখে উদ্বেগের রেখা পড়ে, তখন এই রোদই হয়ে ওঠে তাদের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ। সূর্য উঠলে শুধু জমিতে নয়, উঠোনে, মাঠে, মেঠোপথে সবখানেই যেন একটি জীবন্ততা ফিরে আসে।
আমাদেরও এবার ধান উঠেছিল। কিন্তু টানা কয়েক দিন রোদের দেখা না মেলায় ধান ঘরে জমে ছিল, মনের কোণে চিন্তা আর অপেক্ষা। ধান ভেজা থাকলে তা পচে যেতে পারে, শস্যের মান নষ্ট হয়, সংরক্ষণে বিপত্তি ঘটে। তাই রোদ না থাকাটা কৃষকের কাছে শুধু আবহাওয়ার নয়, জীবিকারও বড় একটা শঙ্কা। তবে ঠিক তখনই, এক সকালে যখন ঝকঝকে রোদ উঠল, আম্মুদের মুখে যেন অদ্ভুত এক স্বস্তির ছায়া নেমে এল। সকালের কচি আলোয় ঘরের ভেতর থেকেই আমরা বুঝে গেলাম ,আজ ধান শুকানোর দিন।
আমাদের বাড়ির উঠোন তেমন বড় নয়, তাই ধান শুকানোর পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তবে আমাদের বাড়ির পাশেই আছে একটি বড় খেলার মাঠ ।যেখানে সাধারণত ছেলেরা ক্রিকেট আর ফুটবল খেলে। সেই মাঠই এই সময়ে রূপ নেয় ধান শুকানোর বিশাল এক প্রাঙ্গণে। চারপাশের বাড়িগুলো থেকে মানুষজন সেখানে ধান নিয়ে আসে, মেলে দেয়, উল্টে-পাল্টে শুকায়, আবার সন্ধ্যে নাগাদ সযত্নে গুছিয়ে নিয়ে যায়।
আমরাও সেই মাঠে ধান মেলে দিই। সকালে পরিবারের সকলে মিলে ধান নিয়ে যাই, আম্মু নিজ হাতে বিছিয়ে দেন পাটাতনের উপর। সূর্যের তাপে ধানের গায়ে লেগে থাকা আর্দ্রতা দ্রুত শুকিয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমরা ছোটরা গিয়ে উল্টে আসি, যাতে সবদিক সমানভাবে শুকায়। এই কাজে যেন একটি সামষ্টিক প্রচেষ্টা তৈরি হয়।পাশের বাড়ির খালারা, চাচিরা, কেউ কারো ধান দেখে আসছে, কেউ কথা বলতে বলতে হাতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই রোদ যেন শুধু ধান নয়, এক ধরনের সামাজিকতা, সহানুভূতি আর ঐক্যেরও প্রতীক হয়ে ওঠে।
এই ধান শুকানোর প্রক্রিয়া শুধু একটি কৃষি কাজ নয়, বরং এটি একটি গ্রামীণ জীবনধারার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এতে জড়িয়ে আছে মানুষে মানুষে সহযোগিতা, প্রকৃতির সাথে বোঝাপড়া, শ্রমের মর্যাদা আর এক ধরনের ঘরোয়া উৎসবের অনুভূতি। মাঠে এক পাশে বাচ্চারা খেলছে, অন্য পাশে ধান মেলা, মাঝখানে চলছে কথোপকথন ।এ যেন বাংলার চিরচেনা, সজীব এক চিত্রপট।এই বাস্তবতা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও গ্রামীণ জীবনের অনেক দিক এখনও প্রকৃতিনির্ভর। কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে হলে, একটি পরিপূর্ণ মৌসুম পেতে হলে, প্রকৃতির অনুকূল আচরণ অপরিহার্য। এই রোদ, এই খোলা মাঠ, আর এই পরিশ্রমই মিলেমিশে গড়ে তোলে আমাদের খাদ্যের নিশ্চয়তা, আমাদের সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তাই একটানা বৃষ্টির পর যখন সূর্য উঠে, সেটা শুধু আবহাওয়া বদল নয়।তা যেন এক নতুন আশার সূচনা, একরাশ প্রাণচাঞ্চল্য, আর মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির এক শুভ মিলনের মুহূর্ত। ধান শুকানোর এই দৃশ্য, এই অভিজ্ঞতা, শুধু চোখে দেখার নয় ,এটি হৃদয়ে অনুভব করার মতো এক জীবন্ত গল্প।
এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।
🌺❤️ধন্যবাদ🌺❤️
Device | Redmi 13 |
---|---|
Camera | 108MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
🎀আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়🎀

Vote@bangla.witness as witness